বাঁধ নিয়ে বিস্তারিতঃ একের ভিতর সব

বাঁধ কী?

বাঁধ হলো একটি কৃত্রিম স্ট্রাকচার, যা নদীর উজানে পানি সঞ্চয় করে তা দ্বারা বিভিন্ন কাজ করার জন্য তৈরি করা হয়। জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আবশ্যক উপকরণ হলো বাঁধ। এটা মূলত একটা প্রতিবন্ধক দেয়াল, যার মাধ্যমে নদীর নাব্য রক্ষা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বা সেচ কাজের জন্য পানি ধরে রাখা এবং বের করে দেওয়া যায়। বাঁধের উজান অংশে যে পানি ধরে রাখা হয় তাকে রিজার্ভার বলে।

বাঁধের ইতিহাস:

প্রাচীন আমলে নদীর পানি নিয়ন্ত্রণ করে কাজে লাগানোর জন্য মেসোপোটেমিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে প্রাচীন যে বাঁধের খোঁজ পাওয়া গেছে তা হলো জর্ডানের জাওয়া বাঁধ, যেই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল আনুমানিক ৩০০০ খ্রিস্টপূর্ব সালে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ করতে মিশরীয়রা সাদ-এল-কাফারা নামক বাঁধ নির্মাণ করেছিল। পরবর্তীতে রোমানরা আরো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে খিলান বাঁধ, বাট্রেস বাঁধ, অভিকর্ষ বাঁধ নির্মাণ করে। আধুনিক কালে উনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য জুড়ে বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়। ১৯০৬ সালে প্রথম বাংলার খরস্রোতা কর্ণফুলীতে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের চিন্তা করা হয়। পাকিস্তানি সময়ে, আইয়ুব খানের শাসনামলে, ১৯৫৭ সালে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয় এবং ১৯৬২ সালে তা সমাপ্ত হয়।

কার্যকারিতা অনুসারে বাঁধের প্রকারভেদ :

  • স্টোরেজ বাঁধ: এধরনের বাঁধের রিজার্ভারে জমা করা পানি স্টোরেজ হিসেবে কাজ করে। দৈনন্দিন কাজে ও শিল্পক্ষেত্রে যে মিঠাপানির প্রয়োজন হয় তা সঞ্চয় করে রাখতে স্টোরেজ ড্যাম বানানো হয়।
  • ডাইভার্শন বাঁধ: এই বাঁধগুলো নদীর পানি আটকে তা অন্য জায়গায় যেমন: সেচের খাল, পানি পরিশোধনাগার এর দিকে প্রবাহিত করে।
  • বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ: উজান অংশের ঢল ভাটি অংশে ছেড়ে দিয়ে তা প্লাবিত করে।
  • হাইড্রোইলেক্ট্রিক বাঁধ: রিজার্ভারের পানি প্রবাহিত করে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।

বাঁধের অংশগুলো কী কী?

একটি বাঁধের প্রধান দুটি অংশঃ

ফাউন্ডেশন বা ভিত্তিঃ

যেকোনো স্থাপনার মতোই,বাঁধের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে এর ভিত্তি। ভিত্তি মজবুত হওয়া চাই যেন এটি বাঁধ এবং তার আটকে থাকা পানির ওজন এবং বহন করতে পারে এবং পানির চাপও মোকাবেলা করতে পারে। বাঁধের প্রকারভেদ অনুসারে ভিত্তি কংক্রিট বা মাটি দ্বারা নির্মিত হতে পারে। যে স্থানে বাঁধ নির্মিত হবে তার ভূতত্ত্বের উপরও ভিত্তির উপকরণ নির্ভর করে। যেমনঃ পলিমাটি সমৃদ্ধ এলাকা আর পাথুরে এলাকায় বাঁধের ফাউন্ডেশনের ডিজাইন এক হলে চলবে না।

মূল কাঠামো বা ড্যাম বডিঃ

ফাউন্ডেশনের মতোই, বাঁধের এই অংশটি কংক্রিট বা মাটি দ্বারা নির্মাণ করা যায়। কংক্রিট দ্বারা নির্মিত হলে, একে আবার তিন ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

  • গ্র্যাভিটি ড্যাম
  • বাট্রেস ড্যাম
  • আর্চ ড্যাম
গ্র্যাভিটি ড্যাম
গ্র্যাভিটি ড্যাম

গ্র্যাভিটি ড্যামঃ

এই বাঁধ পানির ওজনকে প্রতিহত করে এবং নিরেট পাথর দিয়ে এর ভিত্তি নির্মাণ করতে হয়।এক্ষেত্রে বাঁধকে হাইড্রস্ট্যাটিক চাপ, আপলিফট প্রেশার, ভূমিকম্পের চাপ, পলিমাটির চাপ,স্রোতের চাপ প্রভৃতি সহ্য করতে হয়।শীতপ্রধান দেশে যখন রিজার্ভারের পানি বরফ হয়ে যায় তখন বরফের চাপও প্রযোজ্য হয়। উঁচ্চভূমি, যেখানে নদীর শাখা সরু, যেখানে এ ধরনের বাঁধ দেওয়া যায়। বাঁধ এবং বেড়িবাঁধের মধ্যবর্তী অঞ্চলেও এধরনের বাঁধ দেখা যায়।

উচ্চতার ভিত্তিতে এ বাধকে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়ঃ

  • লো ড্যামঃ উচ্চতা সর্বোচ্চ একশ ফুট হয়।
  • মিডিয়াম ড্যামঃ উচ্চতা একশ থেকে তিনশ ফুট হয়।
  • হাই ড্যামঃ উচ্চতা তিনশ ফুটের বেশি হয়।

গ্র্যাভিটি বাঁধের সুবিধা হলো এটি খুবই শক্তপোক্তভাবে নির্মিত হয় ,অনেক উঁচু করে তৈরি করা যায় এবং অন্যান্য প্রকার বাঁধের চেয়ে রক্ষণাবেক্ষণ সহজ। বেড়িবাঁধের মত হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ার আশংকা নেই। তবে এ ধরনের বাঁধ নির্মাণে প্রচুর অর্থব্যয় করতে হয়।

বাট্রেস ড্যাম
বাট্রেস ড্যাম

বাট্রেস ড্যামঃ

এই বাঁধকে ফাঁপা বাঁধও বলা হয়।এই ধরনের বাঁধে মূল দেয়ালের সাথে একাধিক ত্রিকোণাকার দেওয়াল যুক্ত থাকে। কিছুদূর পরপর সমান্তরাল ভাবে নির্মিত সেই নিরেট ,ঢালু উপরিতলের দেয়ালগুলোকেই বাট্রেস বলা হয়। তুলনামূলক দূর্বল ভিত্তির উপরে এরকম বাঁধ নির্মাণ করা যায়। কংক্রিটও কম পরিমাণে প্রয়োজন হয়য় এবং বাঁধকে কোনো আপলিফট প্রেশার সহ্য করতে হয়না। স্থায়িত্বও গ্র্যাভিটি ড্যামের চেয়ে কম নয় বলে এই বাঁধ বেশ জনপ্রিয়।

আর্চ ড্যাম
আর্চ ড্যাম

আর্চ ড্যামঃ

এধরনের বাঁধের উপরিভাগ ধনুকের ন্যায় বাঁকানো ,তাই এর নাম আর্চ (খিলান) ড্যাম। উপরিতলের উত্তল পাশ উজানের দিকে এবং অবতল পাশ ভাটির দিকে থাকে। যেসব স্থানে পানির প্রবাহ সরু কিন্তু গভীর, সেসব স্থান এ বাঁধ নির্মাণের জন্য উপযুক্ত। অন্যান্য বাঁধের তুলনায় চিকন বলে নির্মাণসামগ্রী কম পরিমাণে প্রয়োজন হয়। তবে এই প্রকার বাঁধ নির্মাণ করতে একটু বেশি সময় লাগে।

বাঁধ মাটি বা শিলা দিয়েও তৈরি হতে পারে। তখন একে আর্থফিল বা রকফিল ড্যাম বলে। রকফিল্ড ড্যামে পানি লিক করার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। অবস্থানবিশেষে মাটির বাঁধের উচ্চতা ৫০ মিটারের কম থেকে ১০০ মিটারের বেশি পর্যন্ত হতে পারে।

বাঁধের কাঠামো কীভাবে কাজ করে?

বাঁধের কাঠামোকে তিনটি ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা যায়:

  • পানি ধারক অংশ (Water retaining structure)
  • পানি নিষ্কাশক অংশ ( Water releasing structure)
  • পানি বাহক অংশ ( Water conveying structure)

Water Retaining Structure:

বাঁধের এই অংশগুলো পানিকে উজান থেকে ভাটিতে যেতে বাধা দেয়। এই অংশগুলোর মধ্যে আছে:

হিল : বাঁধের ভিত্তির উজানের দিক

টো: বাঁধের ভিত্তির ভাটির দিক

ক্রেস্ট বা চূড়া: বাঁধের সবচেয়ে উঁচু অংশ। এই অংশে একটা ওয়াকওয়ে বা হাঁটার রাস্তা থাকে।

প্যারাপেট: ক্রেস্টের দুপাশের দেয়াল।

অ্যাবাটমেন্ট: বাঁধের সাথে উপত্যকার অংশ, যা বাঁধের চাপ কমাতে সাহায্য করে।

Water Releasing Structure:

বাঁধের এসব অংশ পানি প্রবাহিত করে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • গ্যালারি : বাঁধের ভিতরে একটা ছোট রুমের মতো জায়গাই হচ্ছে গ্যালারি। পাথরের মধ্যে ছিদ্র হলে সেটাতে গ্রাউট ( পানি, সিমেন্ট ও বালুর মিশ্রণ) ঢেলে মেরামত করা হয় এখানে। এখান থেকে বাঁধের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণও করা যায়।
  • স্পিলওয়ে : বাঁধের রিজার্ভারে পানির স্তর নিয়ন্ত্রণের জন্য যে পথ থাকে,তাকেই স্পিলওয়ে বলে। বেশিরভাগ বড় বড় বাঁধগুলোতে দুটি স্পিলওয়ে থাকে, একটা হলো সার্ভিস স্পিলওয়ে, আরেকটাকে বলে ইমার্জেন্সি বা অক্সিলিয়ারি স্পিলওয়ে। রিসার্ভার থেকে পানি অপসারণে সার্ভিস স্পিলওয়ে ব্যবহার করা হয়। আর রিজার্ভার পূর্ণ হয়ে যাবার পরও যখন অতিরিক্ত পানি আসতে থাকে,তখন ইমার্জেন্সি স্পিলওয়েকে কাজে লাগানো হয়।
স্পিলওয়ে

সার্ভিস স্পিলওয়েকে কয়েকভাগে ভাগ করা যায়, যেমনঃ

  1. ড্রপ স্পিলওয়েঃ কম উচ্চতার বাঁধে দেখা যায়। বাঁধের ভিত্তি দুর্বল হলে তৈরি করা যায় না।
  2. অগি স্পিলওয়েঃ S আকৃতির ড্রপ স্পিলওয়ে। গ্র্যাভিটি ড্যাম বা আর্চ ড্যামে দেখা যায়।
  3. শ্যুট (Chute) স্পিলওয়ে: গভীরভাবে ঢালু। গ্র‍্যাভিটি ড্যাম ও আর্থফিল ড্যামে দেখা যায়।

স্পিলওয়ে গেট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে পারে, আবার নাও হতে পারে।

  • ডাইভার্শন টানেল: পানির দিক পরিবর্তন করে।
  • স্লাইসওয়ে: পানির সাথে আসা পলিমাটি দূর করে।
  • ফ্রিবোর্ড: রিজার্ভারের পানির সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন স্তরের ব্যবধান।

বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণ কীভাবে করে?

অন্যান্য স্থাপনার ন্যায় বাঁধেও রুটিন ইন্সপেকশন করা হয়। তার মধ্যে থাকে ভিজুয়াল বা বাহ্যিক ইন্সপেকশন যেমন: কোথাও পাথরে ফাটল ধরেছে কিনা, প্রেশার সহ্য করতে পারছে কিনা, স্পিলওয়ে ঠিকভাবে কাজ করছে নাকি, কোথাও বর্জ্য আটকে আছে কিনা এসব। এছাড়া বিভিন্ন যন্ত্রের সাহায্যেও বাঁধ মনিটর করা হয়। যন্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • পিজোমিটার: পানির লেভেল এবং চাপ মাপতে ব্যবহৃত হয়।
  • ইনক্লাইনোমিটার: বাঁধের তলার মাটি নিচে সরে গিয়ে ক্ষতি হচ্ছে কিনা তা জানতে ব্যবহৃত হয়।
  • সিসমিক সেন্সর: ভূকম্পন পরীক্ষা করতে ব্যবহার করা হয়।

এছাড়া গেটগুলো (স্পিলওয়েতে বসানো থাকে) কাজ করে কিনা এবং ড্রেনেজ সিস্টেম (ফাউন্ডেশন ড্রেইন, ইন্টার্নাল ড্রেইন, টো ড্রেইন) কার্যকর আছে কিনা তাও বিভিন্ন সময়ে পরীক্ষা করা হয়ে থাকে।

বাঁধ vs ব্যারেজ:

বাঁধ হলো নদীর উজানে পানি সঞ্চয় করে তা নিয়ন্ত্রিত ভাবে বিভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার সিস্টেম। সাধারণত খরস্রোতা নদীতে বাঁধ দেওয়া হয়। ব্যারেজও এক প্রকার বাঁধ। তবে ব্যারেজ হচ্ছে নদীর গতিপথ নিয়ন্ত্রণের জন্য গেট ব্যবহার করার সিস্টেম। ব্যারেজ নদীর পানি সঞ্চয় না করে বিভিন্ন গেটের মাধ্যমে পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে। বাঁধ দিলে নদীর পানির উচ্চতা প্রায় বাঁধের উচ্চতা সমান বেড়ে যায়, কিন্তু ব্যারেজে উচ্চতা মাত্র কয়েকফুট বৃদ্ধি পায়। সমতলের যেসব নদীতে বন্যা হয়, সেখানে ব্যারেজ স্থাপন করা হয়, যেন ভারী বৃষ্টিপাতের সময় অতিরিক্ত পানিকে বিভিন্ন দিকে সরিয়ে বন্যা প্রতিহত করা যায়।

বেড়িবাঁধ কী?

স্থানীয়ভাবে দেওয়া আর্থফিল বা মৃত্তিকা নির্মিত বাঁধ, যা কোনো একটি এলাকাকে পার্শ্ববর্তী নদীর বন্যা থেকে রক্ষা করে। যেহেতু মাটির তৈরি, তাই এ ধরনের বাঁধ স্রোতের তোড়ে ভেঙে যেতে পারে।

বাঁধের সমস্যা বা ঝুঁকিগুলো কী?

বাঁধের নানারকম সুবিধাগুলো উপরে বিভিন্ন স্থানে বলা হয়েছে। তবে এর যে সমস্যা তাও তুলে ধরা হলো:

  1. একটা বাঁধ তৈরি করতে অনেক অর্থ ও উন্নতমানের নির্মাণসামগ্রী দরকার হয় যেন তা অনেক বছর টিকে থাকতে পারে।
  2. যে জায়গায় বাঁধ তৈরি করা হবে তার আশেপাশের এলাকাকে বলে ক্যাচমেন্ট এরিয়া। ক্যাচমেন্ট এরিয়া থেকে জনবসতি উঠিয়ে নিতে হয়, যার কারণে সেই এলাকায় বাস করা মানুষকে জীবিকার জন্য অন্যত্র চলে যেতে হয়।
  3. ভূমিকম্প বা অন্য কোনো কারণে বাঁধ ভেঙে পড়লে মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
  4. নদীর বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি হয়। উজান থেকে ভাটিতে পুষ্টিউপাদানের প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। রিজার্ভারে কৃত্রিম বাস্তুসংস্থান তৈরি হওয়ায় পুরাতন বাস্তুসংস্থান নষ্ট হয়। যেসব মাছ উজানে গিয়ে ডিম পাড়ে তাদের প্রজননে ব্যাঘাত ঘটে।
  5. রিজার্ভারে বর্জ্য জমে পানির দূষণ ঘটাতে পারে।

বাঁধের বিপরীতে আরেকটি বাঁধ দেওয়া যায় কি?

সাম্প্রতিক সময়ের বেশ আলোচিত প্রশ্ন এটি। উত্তর টা একজন এক্সপার্টের কাছ থেকে জেনে নিন না হয়।

‘বাঁধের বিরুদ্ধে বাঁধ’ বানালে সমাধান হবে কি?

উপসংহারঃ

এই পোস্টে সাধারণ মানুষের জন্য যথাসম্ভব সহজবোধ্য ভাষায় বাঁধের প্রকারভেদ, কাঠামো, কোন অংশ কিভাবে কাজ করে, বাঁধের সুবিধা – অসুবিধা প্রভৃতি বলার চেষ্টা করেছি। আশা করি সকলেই বুঝবেন। ইনশাল্লাহ দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top